Saturday, September 28, 2013

সেই "লতা"


অনেক দিন আগে পড়া একটি গল্পের কথা আজ হঠাৎ মনে পড়ে গেল। গল্পটির কাহিনী ছিল এমন (অতি সংক্ষেপে)- ওই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন একজন নারী। বয়স ২০-২২ বছর। তাঁর স্বামীর বয়স ছিল ৩৫-৩৭ বছর। তাঁদের ৩ বছরের একটি ছোট মেয়ে ছিল।

ওই নারীর নামটা এখন আর মনে করতে পারছি না। ধরে নিলাম ওই নারীর নাম ছিল "লতা"। লতার পরিবার ছিল দিন এনে দিন খাওয়া পরিবার। লতাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তাঁর স্বামী। বেশ কিছু দিন ধরে লতার স্বামী যক্ষ্মা রোগে ভুগছিলেন। ফলে পরিবারের উপার্জন পুরাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। জমানো যা কটা টাকা ছিল, তা খুব দ্রুত শেষ হয়ে গিয়েছিল। আশে পাশের বাড়িতে ঝি এর কাজ করে, ধার কর্জ করে, চেয়ে কোনরকমে তাঁরা অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছিলেন। আর লতার স্বামীর চিকিৎসা? যেখানে খাওয়াই জুটে না সেখানে চিকিৎসা বিলাসিতা-সম।

বিনা চিকিৎসায় লতার স্বামীর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছিল। লতা এর ওর কাছ থেকে স্বামীর চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করলেন কিন্তু সফল হলেন না। দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন লতা। তাঁর এই অবস্থা দেখে কিছু দুষ্ট লোক টাকার বিনিময়ে তাকে কু-প্রস্তাব দিল। কিন্তু লতা ঘৃণাভরে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

এভাবে আরও কিছু দিন যাবার পর লতার স্বামীর অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে গিয়েছিল। লতা আর সহ্য করতে পারছিলেন না। শেষমেশ আর কোন উপায়ান্তর না দেখে, অসুখে নুজ্জ স্বামীর মুখের দিকে তাকাতে না পেরে কিছু টাকার বিনিময়ে তিনি তাঁর সতীত্ব বিসর্জন দিলেন।

দোকানে গিয়ে ওষুধ, ফল ইত্যাদি কিনে বাড়ি ফিরলেন লতা। দেখলেন তাঁর বাচ্চাটি ঘরের দরজায় বসে বসে কাঁদছে। দরজা ধাক্কা দিয়ে লতা দেখলেন সেই খাটটিতেই লতার স্বামী শুয়ে আছেন, যেখানে প্রতিদিন শুয়ে থাকতেন আর লতা ঘরে ফেরার সাথে সাথে ঠোঁটের কোনে একটি মিষ্টি হাসি দিয়ে আগ্রহী চোখে লতার দিকে তাকাতেন। কিন্তু আজ আর লতার স্বামী লতার দিকে তাকাচ্ছেন না, ঠোঁটে নেই সেই হাসি, আগ্রহী চোখ নিয়ে তিনি আজ তাকাচ্ছেন না লতার দিকে, শুধু তাঁর নিথর দেহ পড়ে আছে সেই বিছানায়।


-------------------------------------------

এ ধরনের আরও পোস্ট পেতে নিচের লিংক এ ক্লিক করুন -

এখানে ক্লিক করুন


Post Comment

No comments:

Post a Comment