Saturday, April 17, 2021

আত্মসমালোচনা

 যারা বাধ্য হয়ে বা পেশাগত প্রয়োজনে বের হচ্ছেন, তাদের কথা ভিন্ন। তারা ঘর থেকে বের হন দুঃশ্চিন্তা নিয়ে, তাদের নিয়েও দুঃশ্চিন্তায় থাকে তাদের পরিবার। মনে মনে নিজেদের অপরাধী ভাবে এদের অনেকে। ভাবে, এমন কাজ বা চাকুরী না করে অন্যকোন পেশায় থাকলে এই ঘোর দূর্যোগে ঘর থেকে বের হতে হতো না, তার কারনে ঘরের অন্য সদস্যদের সুরক্ষা সেক্রিফাইজ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতো না। সারাদিন যতটা সম্ভব সাবধানতার সাথে দায়িত্ব পালন শেষে ঘরে ফিরে সম্ভাব্য সকল স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার পরও তাদের নিজের কাছে একটা খুঁতখুঁতে অনুভূতি কাজ করে। কিন্তু এদের সংখ্যা কতো ভাগ? আর এদের কি সুযোগ বা মানসিকতা থাকে এখানে সেখানে বাউন্ডুলের মতো ঘুরে বেড়ানো? 


স্বাভাবিকভাবেই বেশিরভাগ মানুষ একালে প্রতিদিন বাজার-সদাই করে না। কেউ সপ্তাহে, কেউবা পাক্ষিকভাবে।


প্রায় প্রতিদিন ফেসবুকে দেখি, অমুক_তমুক নামক কিছু লোক অলিগলির বা বাজারঘাটের ছবি তুলে নিজের টাইমলাইন থেকে পোস্ট করে ক্যাপশনে কটাক্ষ বা ব্যঙ্গ করে লেখে, 'দেখুন কেমন চলছে লকডাউন।' বা 'এর নাম লকডাউন?' বা 'এমন লকডাউন দেওয়ার চেয়ে না দেওয়া কি ভালো নয়?' বা ' ব্যার্থ লকডাউন।' বা 'লকডাউন বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যার্থ।'

প্রশ্ন হলো, সে কেন ঘর থেকে বের হলো? তাকে কে এ দায়িত্ব দিয়েছে? সে কি লকডাউন নিয়ম ভঙ্গ করলো না? কোন কাজ থাকলে ছবি তোলায় মনযোগ না দিয়ে, দ্রুত কাজ শেষ করে ফিরে আসা প্রয়োজন ছিল না? সে তার পরিবারকে কোন উদ্দেশ্যে ঝুঁকিতে ফেললো? নাকি এধরণের লোকরা নিজেকে করোনার চেয়ে বেশি শক্তিশালী মনে করে??


আত্মসচেতনতা ছাড়া কোন লকডাউন-ই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে না; হোক সেটা শিথিল বা কঠোর। আর অন্যের সমালোচনার চেয়ে আত্মসমালোচনা বেশি জরুরি।

Post Comment

No comments:

Post a Comment