জনাব রজব আলী ও মিসেস রজব আলী জান্নাতবাসী হয়েছেন যথাক্রমে ৭ ও ৫ বছর আগে। তাঁদের তিন ছেলে ও তিন মেয়ে এখনো জনাব ও মিসেস রজব আলীর বংশের বাতি হিসেবে প্রজ্জলিত আছেন। জনাব ও মিসেস রজব আলীর তিন মেয়েকে নিয়ে কিছু কথা বলব।
জনাব ও মিসেস রজব আলীর তিন মেয়ের নাম যথাক্রমে লোপা, প্রমা এবং মিরা। তিন মেয়েকেই রজব সাহেব দেখে শুনে সম্ভ্রান্ত ঘরে বিয়ে দিয়ে গেছেন। বড় মেয়ে লোপার এক মেয়ে ও দুই ছেলে। মেজ মেয়ে প্রমা ও ছোট মেয়ে মিরার এক ছেলে, এক মেয়ে।
বড় মেয়ে লোপা মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন এবং দুই ছেলেকেও বিয়ে করিয়েছেন। তাঁর মেয়ের এক ছেলে, এক মেয়ে। অন্যদিকে বড় ও ছোট উভয় ছেলের একটি করে ছেলে হয়েছে। লোপা ও তাঁর স্বামী তাঁদের মেয়ের ছেলে ও মেয়ের জন্য এক কথায় পাগল। তাঁদের মেয়ের ছেলে ও মেয়েরা তাঁদের দৃষ্টিতে কখনো কোন ভুল করতে পারে না। অন্যদিকে দুই ছেলের ছেলেরা তাঁদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন বলে তাঁদের ধারনা। ওই ছেলেরা যাই করুক না কেন তাঁদের কাছে তা বিষসম মনে হয়। লোপা ও তাঁর স্বামী মোটামুটি নিশ্চিত যে, তাঁদের ছেলের এই ছেলেরা এক সময় তাঁদের মুখে চুন কালি দিবে। খোলা চোখে দেখলেই বুঝা যায়, লোপা ও তাঁর স্বামীর যত আদর সোহাগ সব নির্ধারিত তাঁদের মেয়ের ছেলে, মেয়ের জন্য আর যত ঘৃণা, অবজ্ঞা সব তাঁদের ছেলেদের ছেলেগুলোর জন্য।
মেজ মেয়ে প্রমাও মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন এবং ছেলে বিয়ে করিয়েছেন। উনার মেয়ের এক ছেলে, এক মেয়ে এবং ছেলের একটি মাত্র ছেলে। ইতিমধ্যে প্রমা এবং তাঁর স্বামী তাঁদের মেয়ের একমাত্র মেয়েটির বিয়ের জন্য বেশ কিছু পরিমান টাকা ফিক্সড ডিপজিট করে ফেলেছেন এবং তাঁদের মেয়ের একমাত্র ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ইতিমধ্যে তাকে একটা ফ্ল্যাট দিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। অন্যদিকে তাঁদের ছেলের ছোট ছেলেটি তার ছেলে বেলা থেকেই নিজ ঘরে নিজেকে পরবাসী ভাবতে শিখছে।
ছোট মেয়ে মিরা মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। ওই মেয়ের এক ছেলে ও এক মেয়ে। মিরা ও তার স্বামী তাঁদের মেয়ের ছেলে ও মেয়েকে নিজেদের জান্নাত ভাবেন। প্রতিদিন সকাল বিকাল দুই বেলা তাদের মুখ না দেখলে মিরা ও তার স্বামীর যেন ভাতই হজম হয় না। মিরা ও তার স্বামী তাদের মেয়ের ছেলে ও মেয়ে নিয়ে এতোটাই মজে আছেন যে তাদের উপযুক্ত ছেলেকে বিয়ে করানোর কথাই তারা ভুলে গেছেন।
মন জানতে চায়, "কলি কি সত্যিই উলটাইতে বসিল?"
No comments:
Post a Comment