'বইপড়া' প্রবন্ধে প্রমথ চৌধুরী বলেছেন, "ধর্মের চর্চা চাই কি মন্দিরের বাইরেও করা চলে, দর্শনের চর্চা গুহায়,নীতির চর্চা ঘরে এবং বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে; কিন্তু সাহিত্যের চর্চার জন্য চাই লাইব্রেরি;ও-চর্চা মানুষে কারখানাতেও করতে পারে না; চিড়িয়াখানাতেও নয়। এইসব কথা যদি সত্য হয়,তাহলে আমাদের মানতেই হবে যে,সাহিত্যের মধ্যে আমাদের জাত মানুষ হবে। সেইজন্য আমরা যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব,দেশের তত বেশি উপকার হবে।"
আমাদের পরিবর্তনশীল সমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, বদলে যাচ্ছে আমাদের জীবনাচরণ এবং আমাদের বিনোদনের মাধ্যম। একটা সময় ছিল যখন বইপড়া ছিল একটি অন্যতম বিনোদন। তবে একালে তেমন আর দেখা যায় না। এক্ষেত্রে শুধু পাঠককে দায়ি করলেই যথার্থ হবে না বরং বিনোদনের নতুন নতুন শুদ্ধ-অশুদ্ধ মাধ্যমগুলোও এক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক বিনোদনের সব মাধ্যমকে নেতিবাচকভাবে দেখার সুযোজ নেই। তবে একথা মানতেই হবে, বইপড়া সর্বকালের সর্বসেরা শুদ্ধ বিনোদন। আবার বইপড়াকে শুধুমাত্র বিনোদন বললেও ভুল হবে; এর গুরুত্ব আরো ব্যাপক। বই মানুষের মনের দর্পণ, বই মানুষের সেরা বন্ধু, বই মানুষকে সৃজনশীল করার সেরা হাতিয়ার। যে ব্যাক্তি যত বেশি বই পড়বে, সে ব্যাক্তি তত বড় মনের অধিকারী হবে।
তরুন প্রজন্মকে বইমুখী করতে এখনই প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। এক্ষেত্রে সমাজের শিক্ষানুরাগী ও সেবকদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শিক্ষক সমাজ ও সমাজের সচেতন সমাজ তরুণদের লাইব্রেরিতে যেতে উৎসাহিত করবেন। শুরুতেই যে খুব বেশি সাড়া পাওয়া যাবে, তা হয়তো আশা করা যায় না। তবে আমি জানি আমাদের তরুন সমাজ এখন অনেক বেশি সচেতন, অনেক বেশি আন্তরিক। যথাযথ সুযোগ ও দিক-নির্দেশনা পেলে সকল ভাল কাজগুলো তাদের পক্ষেই সবার আগে করা সম্ভব। তাই আমাদের কাজ হবে শুধু একবার তরুন প্রজন্মকে লাইব্রেরিমুখী করে বইপড়ার অমৃত আস্বাদনের ব্যবস্থা করে দেয়া। বাকি কাজ তরুন সমাজ নিজেই করবে।
কারন আত্মোন্নয়ন কে না চায়!
No comments:
Post a Comment