তিস্তা নদীর উৎপত্তি ভারতের সিকিমে। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর অংশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তা বাংলাদেশে এসেছে। তিস্তা অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত হওয়া নদীগুলির মধ্যে চতুর্থ সবচেয়ে বড় নদী। সেচ ও মৎস্য চাষে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিস্তার প্লাবনভূমি বাংলাদেশের ২৭৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিবছরের ডিসেম্বর থেকে মে মাসের মধ্যে তিস্তার পানির ৫০ শতাংশ ভাগ চায়। কারণ এসময়ে দেশে পানির যোগান সবচেয়ে কম থাকে। ফলে বাংলাদেশের কৃষকদের একাংশ জীবন-জীবিকা নিয়ে প্রবল সমস্যায় পড়েন। পানি সঠিকভাবে না পাওয়ায় বাংলাদেশের পাঁচটি জেলার ১ লক্ষ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়।
১৯৮৩ সাল থেকে পানি নিয়ে দরাদরি চলছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। ২০১১ সালে একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। যার সময়কাল ১৫ বছরের। সেই অনুযায়ী তিস্তার ৪২.৫ শতাংশে ভারতের অধিকার ও ৩৭.৫ শতাংশে বাংলাদেশের অধিকার উল্লেখ ছিল।
এই চুক্তির বিরোধিতা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে তা আর সাক্ষরিত হয়নি। ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে প্রস্তাবিত ঢাকা সফরও প্রথমে রাজি হয়ে এই চুক্তির বিরোধিতা করে শেষে বাতিল করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বারবার তিস্তা চুক্তি করতে চাইলেও রাজি হননি পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর যেহেতু পানি বন্টনের বিষয়টিতে রাজ্যের উপরে নির্ভরশীল কেন্দ্র, তাই মমতার সম্মতি ছাড়া তিস্তা পানিবণ্টন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে না।
‘সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে’ তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে বলে বরাবরের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতেও আশ্বাসের বাণী শুনিয়ে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এবারও পশ্চিমবঙ্গের বিধান সভায় মমতার পুনঃজয়ে তিস্তা চুক্তি নিয়ে খুব বেশি আশা নেই বলেই ধারণা করা যায়।
No comments:
Post a Comment