Friday, April 27, 2018

ধর্মেই মুক্তি

"ধর্ষণ"- বর্তমানে বহুল আলোচিত একটি ঘৃণ্য অপরাধ। ধর্ষণের কারণ নিয়ে বিভিন্ন মতাবলম্বীগণ ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করছেন। কারো কারো মতে নারীদের বিকৃত পোশাক এর জন্য দায়ী, কারো মতে যথার্থ বিচারের অভাব, আবার কেউ কেউ দায় দিচ্ছেন কিছু পুরুষরুপী পশুর বিকৃত মানসিকতাকে।

আমি একটু ভিন্নমত পোষণ করছি। আমার মতে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মত সকল ঘৃণ্য কাজের মূলে রয়েছে নৈতিকতার অবক্ষয়। আর এই নৈতিকতার অবক্ষয়ের মূল কারন হল নিজ নিজ ধর্ম সম্পর্কে না জানা এবং ধর্মকে না মানা। একমাত্র নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষাই পারে মানুষকে সকল প্রকার অপকর্ম থেকে দূরে রাখতে। বিকৃত পোশাক এবং বিকৃত মানসিকতা কোনটির স্থানই কোন ধর্মে নেই। সবাই যদি নিজ নিজ ধর্মকে লালন করে এবং পালন করে ধর্ষণ শব্দটি আমাদের অভিধান থেকে আদূরেই অদৃশ্য হতে বাধ্য।

ইদানিং টোল বা মক্তবের কথা তেমন একটা শোনা যায় না। কচিকাঁচা শিশুদের মনে নৈতিকতার বীজমন্ত্রটি বপন হবার সুযোগ এখন খুব কম। কিছু কিছু ধর্মীয় শিক্ষাদানের প্রতিষ্ঠান থাকলেও সেগুলো বিশেষ উদ্দেশ্যসাধক। বিশ্বায়ন এর এই যুগে নৈতিক শিক্ষা অভিভাবকগণের কাছে অনেকাংশেই গুরুত্বহীন। অভিভাবকগণ এখন আর তাঁদের ছেলেমেয়েকে ভাল মানুষ বানাতে চান না বরং ভাল ডাক্তার, ভাল ইঞ্জিনিয়ার, ভাল ব্যাংকার ইত্যাদি বানাতে চান। ফলে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার চেয়ে 'এ প্লাস' পাওয়ার শিক্ষাই এখন আমাদের অভিভাবকগণের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিজ্ঞ অভিভাবকগণ বেমালুম ভুলে যান যে, নৈতিকতাহীন এই সব এ প্লাসধারী, তথাকথিত ভাল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার আর ব্যাংকাররা একদিন সামাজিক ব্যাধীতে পরিনত হবে। ধর্মীয় শিক্ষা মানুষকে নম্র হতে শিখায়, সংযমী হতে শিখায়, স্নেহময় হতে শিখায়, সর্বোপরি আমানতের হেফাজত করা শিখায়।

নগ্নতাই কি আধুনিকতা? আধুনিকতার নামে আমরা ইদানিং যেসব পোশাক পরিধান করছি, তা কি সত্যিই আমাদের আধুনিক করছে? আমাদের সকল ধর্মে নারীপুরুষ উভয়ের জন্য পোশাক পরিধান বিষয়ক নির্দেশনা প্রদান করা আছে। আমাদেরকি তা মেনে চলা উচিত নয়? কেন আমরা পরনারী বা পরপুরুষ-এ আসক্ত হব? আমাদের ধর্মকি আমাদের সে শিক্ষা দেয়? কেন আমরা কারো সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলবো এবং সুযোগ বুঝে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনব? কেন আমরা নারীজাতিকে মাতৃতুল্যা বিবেচনা করব না? এরকম আরো বহুবিধ প্রশ্ন আছে এবং সকল প্রশ্নের উত্তর একটাই; নৈতিক তথা ধর্মীয় শিক্ষার অভাব।

আমরা যদি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করি, তাহলে তাঁর দেখানো পথই আমাদের আলোর দিশারী। শুধুমাত্র বিপদে পড়ে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করলেই আমাদের কর্তব্য শেষ হয়ে যায় না বরং তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করাই আমাদের পবিত্র কর্তব্য। আর এটিই আমাদের মুক্তি দিতে পারে ধর্ষণসহ নানাবিধ ঘৃণ্য অপরাধ হতে।

Post Comment

No comments:

Post a Comment