কর্মেই আনন্দ, অলসতা জীবনকে অর্থহীন করে। প্রতিযোগিতা সেই কর্মকে করে রোমাঞ্চকর। প্রতিযোগিতা যেখানে নেই, সেখানে কাজ করে আনন্দ কোথায়? তবে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কখনই কাম্য নয়। অসুস্থ প্রতিযোগিতা কেবল উদ্যমই নষ্ট করে না বরং তা সৃজনশীলতা বিকাশে অন্যতম প্রধান অন্তরায়।
আমি বরাবরই তারুণ্যের পূজারী। তবে যারা তারুণ্য বলতে শুধুমাত্র জোয়ান শরীরকে বুঝায়, আমি তাদের দলে নই। যে জোয়ান শরীরে জোয়ান মনের বসবাস নেই, তাকে আমি তারুণ্য বলি কি করে? তাই শারীরিকভাবে তরুণ হওয়ার চেয়ে মানসিকভাবে তরুণ হওয়া বেশি জরুরী।
তরুণরা দেশ ও জাতির অমূল্য সম্পদ। তরুণরা প্রাণশক্তিতে ভরপুর, তরুণদের রয়েছে সতেজ মেধা, তরুণরা শারীরিক বলে বলীয়ান। তারুণ্যের উচ্ছাসের গোপন রহস্য হল তরুণদের কর্মমুখর জীবনযাপন। কাজ করতে তারা ভালবাসে, কাজেই তারা শান্তি খুঁজে পায়। কে কবে কোথায় কোন্ কর্মহীন তরুণ দেখেছে? উল্লেখ্য যে, শুধুমাত্র শারীরিক ক্ষিপ্রতা নয়; অসম্ভব মানসিক ক্ষিপ্রতার পাশাপাশি তরুণদের রয়েছে বিস্ময়কর মেধাশক্তি চালনার ক্ষমতা। সৃজনশীলতায় তারা অতুলনীয়, সুবাস ছড়ানোয় তারা অপ্রতিরোধ্য। তরুণরা নিজে কাঁপে, অন্যকে কাঁপায়; অনেক ধৈর্য্যে গড়ে, আবার নিমিষেই তা ভাঙে; অকারণে হাসে, অন্যকে হাসায়; আগুন জ্বালায়, আবার অন্যের সাহায্যার্থে আগুনের লেলিহান শিখায় নিজেকে বিসর্জন দেয়। এসবেই তো তারুণ্যের সার্থকতা। যে জাতি তারুণ্যকে যথাযথভাবে লালন পালন করতে পারে, সে জাতি কখনো মেধাশূন্য হতে পারে না।
সঠিক দিক-নির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অফুরন্ত প্রাণশক্তি, সতেজ মেধা, শারীরিক ক্ষমতা যেন বিফলে না যায়; যেন ক্ষয়ে না যায় কোন স্বার্থের বেড়াজালে; কোন নষ্ট শক্তি যেন দখল করে নিতে না পারে এই অমূল্য তারুণ্য শক্তিকে।
আমরাই পারি তরুণদের একটি কর্ম-উপযোগী, সুস্থ প্রতিযোগিতাময় পরিবেশ উপহার দিতে; শুধুমাত্র স্বদিচ্ছাই যথেষ্ট। কেন আমাদের তরুণরা হারিয়ে যাবে অন্ধকারের অতল গহ্বরে? কেন তারা বিষামৃতে বুদ হয়ে থাকবে? কেন তারা বলি হবে অসুস্থ প্রতিযোগিতার?
এ দায় কার???
No comments:
Post a Comment