২০১৪ সালের কথা বলছি। তখন আমি 'ঘাসফুল' এর ফেনী অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্বরত। পদমর্যাদার দিক থেকে উক্ত অঞ্চলে অবস্থানকারী প্রতিষ্ঠান এর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা।
ওই সময়ে একবার ফেনী ডিসি অফিসে আয়োজিত আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক কর্মশালায় 'ঘাসফুল' এর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলাম। আমার আলোচনার বিষয় ছিল ফ্রিল্যান্সারদের কিভাবে আমার প্রতিষ্ঠান সহযোগিতা করতে পারে।
যাই হোক, আমার পূর্ববর্তী আলোচক আলোচনা করছিলেন তাই আমি পাশের রুমে বসে অপেক্ষা করছিলাম। অপেক্ষাকালীন সময়ে আলাপ হল ডিসি অফিসের দায়িত্ববান কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে।
আমার কর্মস্থল ফেনী ও বাসা মীরসরাই এবং আমি উক্ত এলাকায় প্রতিষ্ঠান এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসব জেনে উক্ত কর্মকর্তারা ধরেই নিলেন, আমি মহাসুখী একজন মানুষ। কেউ একজন বললেন, অফিসে সপ্তাহে ২/১ বার এসে স্বাক্ষর করলে তো চলে, তাই না? কেউ বা বললেন, বেতন তোলার দিন এসে পুরো মাসের স্বাক্ষর করলেই তো হয়ে যায়, তাই না? যখন আমি আপত্তি জানালাম, তখন তারা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত হলেন, যদিও আমার ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অফিস, আমি হয়তো ১২ টা করে অফিসে আসি আর ২.৩০টা / ৩ টা করে বাসায় চলে যাই। আমি উনাদের কান্ড দেখছিলাম আর হতবাক হচ্ছিলাম।
অবশেষে অনেক বাক্য ব্যয় ও পরিশ্রমের বিনিময়ে তাদের বোঝাতে অনেকটাই সক্ষম হলাম যে, তারা যা ভাবছেন আসলে তা নয়। আমাকে প্রতিদিনই ৯টার আগে অফিসে ঢুকতে হয় এবং ৬টার আগে কখনো অফিস থেকে বের হতে পারি না তাছাড়া প্রতি পদক্ষেপে আমাকে জবাবদিহি করতে হয়। আরো জানালাম, এই নিয়মকানুন শুধু আমার জন্য নয় বরং আমার প্রতিষ্ঠান এর একজন সাপোর্ট স্টাফ থেকে শুরু করে সিইও পর্যন্ত সবাই এই নিয়ম মেনে চলে। এবার তারাই অবাক হলেন।
অবশ্য ইদানিং আবার আমি নিজেই অবাক হই যখন আমার আশেপাশে এমন কিছু কর্মকর্তা দেখি যারা নিয়ম কানুন এর কোন তোয়াক্কা করেন না। ইচ্ছেমত অফিসে আসেন বা অফিস ত্যাগ করেন। ০৮ ঘন্টা কর্মদিবসের মধ্যে কখনো কখনো ওই সব বড় অফিসারকে ০৩ ঘন্টাও অফিসে পাওয়া যায় না। তাদের কোন জবাবদিহিতা নেই, কত মহাসুখি তারা!!!!!
No comments:
Post a Comment