এখন আমি কিছুটা বিক্ষিপ্ত। কোথায় যেন সুরটা ঠিকমত লাগছে না, কোথায় যেন তালটা বারবার কেটে যাচ্ছে।
সমাজটা আজ লজ্জিত, সে যেন নিজেকে সমাজ বলে পরিচয় না দিতে পারলেই বেশি খুশি হয়। মানুষ এই সমাজকে এতটাই কলুষিত করেছে যে সমাজ সেই ভার বহন করতে অনেকটাই অপারগ।
আমরা বুক ভরা শ্বাস নিয়ে গৌরব করে বলি, আদিম কালের মানুষ ছিল অসভ্য। আমরা আজ সভ্য, ক্রমেই সভ্যতার ক্রমবিকাশ আমরা ঘটিয়ে চলছি। হে নিজেকে সভ্য দাবি করা মানুষ, এই বিক্ষিপ্ত আমাকে প্রমাণ করে দিন যে আপনাদের দাবি সঠিক। যদি প্রমান করে দিতে পারেন তাহলে কাল থেকে আমিও নিজেকে সভ্য বলে দাবি করব। আসলে আমি মুখিয়ে আছি, মানুষ হিসেবে নিজেকে সভ্য বলে দাবি করার এই মোক্ষম সুযোগ গ্রহণ করতে।
ছোটকাল থেকে জেনে এসেছি, "লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু"। এখন আমার প্রশ্ন জাগে, সমাজের সাথে সাথে কি এই সব বাণীও পরিবর্তনশীল? লোভ-তো এখন তথাকথিত সফল মানুষ এর অলংকার হিসেবেই বিবেচিত হয়, পাপ হয় কিনা জানি না তবে কই; মৃত্যু হতে-তো দেখি না। বরং আঙুর, আপেল আর নাশপাতির জুস খাওয়া সেই লোভী লোকদের অনেক আগেই হতভাগা নির্লোভ লোকেরা পরপারের টিকেট হতে পরকালের গাড়ি ধরে।
আর আস্থা? সেতো আজ সোনার হরিন। কার উপর আমি আস্থা রাখবো? সবাই-তো এখন নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। আমার রাখা আস্থা হেফাজত করার তার সময় কোথায়? যদি কোন তথাকথিত বিচক্ষণ লোককে বলেন, 'অমুক' এর উপর আপনার আস্থা আছে; সাথে সাথে ওই তথাকথিত বিচক্ষণ লোক এক গাল হাসি হেসে বলবেন, "বাবা, বাংলা অভিধান এ কি এখনো 'আস্থা' শব্দটা আছে? বাংলা একাডেমি কি করে? তারা কি আর আপডেট হবে না?"
ইতিমধ্যে যারা আমাকে নৈরাশ্যবাদী হিসেবে বিবেচনা করে ফেলেছেন, আমার পক্ষ থেকে তাদের জন্য রইল শুভকামনা। কারন কিছুদিনের মধ্যেই আপনারাও আমার দলে যোগ দেবেন। আর যেহেতু আমি আপনাদের সিনিয়র, তাই শুভ কামনা জানাবার অধিকার-তো আমার আছেই, তাই না?
No comments:
Post a Comment